"চরম সুখ" বা অত্যন্ত আনন্দ এবং তৃপ্তির অনুভূতির সঙ্গে সম্পর্কিত হরমোনগুলির মধ্যে মূলত "ডোপামিন," "সেরোটোনিন," "অক্সিটোসিন," এবং "এন্ডোরফিন" উল্লেখযোগ্য।


ডোপামিন: এটি মস্তিষ্কের পুরস্কার ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে এবং আনন্দের অনুভূতি সৃষ্টি করে।


সেরোটোনিন: এটি মেজাজ, ঘুম, এবং সামাজিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্কে সুখের অনুভূতি বাড়ায়।


অক্সিটোসিন: এটি সাধারণত "কাডল হরমোন" নামে পরিচিত এবং মানুষের মধ্যে সম্পর্কের বন্ধন ও ভালোলাগার অনুভূতি বাড়ায়।


এন্ডোরফিন: এটি স্বাভাবিক পেইন কিলার হিসেবে কাজ করে এবং শরীরে "ইউফোরিয়া" বা চরম সুখের অনুভূতি জাগায়।



এই হরমোনগুলির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার মাধ্যমে চরম সুখের অনুভূতি বৃদ্ধি পেতে পারে।

অক্সিটোসিন: অক্সিটোসিনকে "ভালবাসা বা বন্ধনের হরমোন" হিসেবেও বলা হয়। এটি মানব সম্পর্কের মধ্যে স্নেহ, বিশ্বাস এবং সংযোগ বৃদ্ধি করে। সঙ্গী, বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, আলিঙ্গন, এবং সামাজিক মেলামেশার মাধ্যমে অক্সিটোসিন নিঃসরণ হয়।


ডোপামিন: এটি "পুরস্কার হরমোন" নামে পরিচিত এবং আমাদের বিভিন্ন আচরণ বা ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে খুশি ও তৃপ্তির অনুভূতি এনে দেয়। ডোপামিন তখন নিঃসৃত হয় যখন আমরা কোনো সফলতা অর্জন করি, নতুন কিছু শিখি, আমাদের পছন্দের খাবার খাই, বা প্রিয় কাজ করি। এটি মস্তিষ্কের পুরস্কার কেন্দ্রকে সক্রিয় করে, যা আমাদের আরও উত্সাহিত করতে কাজ করে।


সেরোটোনিন: এটি একটি নিউরোট্রান্সমিটার, যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। সেরোটোনিনের উচ্চ মাত্রা সাধারণত সুখ, আত্মবিশ্বাস এবং প্রশান্তির অনুভূতি সৃষ্টি করে। ব্যায়াম, সূর্যালোক গ্রহণ, এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস সেরোটোনিনের স্তর বাড়াতে সহায়ক। সেরোটোনিনের ঘাটতি মানসিক বিষণ্নতা বা উদ্বেগের কারণ হতে পারে।


এন্ডোরফিন: এই হরমোন সাধারণত ব্যায়াম, হাসি, বা যেকোনো ধরণের শারীরিক ব্যথা বা চ্যালেঞ্জিং কাজের মাধ্যমে মুক্ত হয়। এটি প্রাকৃতিক পেইন কিলার এবং চাপমুক্ত রাখার পাশাপাশি সুখের অনুভূতি বাড়ায়। "রানারস হাই" এর অনুভূতি, যা একটি দীর্ঘ সময় ধরে দৌড়ানোর পর অনেকেই অনুভব করেন, এটি এন্ডোরফিনের মুক্তির একটি উদাহরণ।

এই চারটি হরমোন মিলে চরম সুখের অনুভূতি এনে দেয় এবং একে অপরকে পরিপূরক করে কাজ করে। মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য এগুলির সঠিক মাত্রায় নিঃসরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভালো খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক যত্ন এবং সামাজিক সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে এগুলিকে সক্রিয় রাখা সম্ভব।